অরণ্যের শিকারি জীবনের তাজা মাংশের স্বাদ,
এখনও আমার মুখে লেগে আছে,
নাগরিক খাবারের প্রতি ভীষণ অনীহা জমছে তাই,
নাগরিক প্রমোদশালায় বসে অপরের স্বাস্থ্যপানে নিমজ্জিত হতে পারিনা,
অরণ্যের গভীরে ঘুরে ঘুরে খুঁজে ফিরি অরণ্য-নৃত্যের আসর,
তখন অরণ্যের মৃত হরিণশাবক, বিলুপ্তপ্রায় বাঘ, কেটে ফেলা গাছ
আমাকে সতর্ক করতে মহাবিপদ সংকেত দেয়।
সে সংকেত অগ্রাহ্য করে বসে আছি জনৈক মেগাসিটির চিড়িয়াখানার খাচার ভেতরে-
খাচার সাইনবোর্ডে লেখা ,’ অরণ্যচারী মানুষ। এর থেকে বাচ্চাদের নিরাপদ রাখুন!”
আহা! এ স্বপ্নও যদি সত্যি হতো!
.
যেদিন আমরা অরণ্যচারী ছিলাম, সেদিনের মত নিস্পাপ আমরা ছিলামনা কখনো।
সভ্যতার মুখোশ পরে এই আধুনিক যুগে আমরা অসভ্য হয়ে যাচ্ছি ক্রমশ,
নষ্টামির যুদ্ধে নেমে বিজয়কেই একমাত্র স্থির লক্ষ্য করে নিয়েছি।
.
সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগে অরণ্যের লতাপাতায় দৈহিক লজ্জার আবরণ,
আর অজ্ঞতাই হয়তো মানসিক লজ্জাকে আড়ালে রেখেছিলো।
অথচ আধুনিকতার দোহাই দিতে থাকা যতসব অসভ্য মানুষ
দিব্যি কাপড়ে দেহ ঢেকে বীভৎস মানসিক লজ্জাস্তান উন্মুক্ত করে রাখে!
মানুষকে খুন করতে তাই হাত কাঁপেনা একটুও!
.
সামরিক শক্তির নামে মানুষ হত্যার নির্লজ্জ সামরিক মহড়া,
ক্ষুধার্তের খাদ্য বিক্রি করে আসে বিলিয়ন ডলারের আগ্নেয়াস্ত্র।
মানুষ রক্ষায় নয়, হত্যায় সন্তর্পন পদচারণা মানুষের!
হিংস্র হায়নার সাথে দলবেধে লড়তো যে মানুষ,
শিকাড়ের খাবার ভাগ করে খেয়ে প্রচন্ড প্রতিকূলতার মাঝেও
টিকে ছিলো যে মানুষ, সেই মানুষ আজ ভীষণ একা!
এ সবই আধুনিকতার নিষ্ঠুরতম দান।
হাত পেতে নাও, মন ভরে নাও হে মানুষ!
.
১৩-০১-১৭
বাংলামটর, ঢাকা।