ভাইরাস কোন বাহকের দেহ ছাড়া বাঁচতে পারলেও মৃতের মত আচরণ করে এবং বংশবৃদ্ধি করতে পারেনা। এই তথ্যটা আমরা যখন থেকে ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য পড়ে আসছি সেদিন থেকেই জানি। সবাই জানি। কিন্তু কেন এমন হয়? আচ্ছা T2 bacteriophage ভাইরাসের নাম তো শুনেছি সবাই। এই ভাইরাস বংশবৃদ্ধির জন্য ব্যাকটেরিয়ার দেহ বেছে নেয় কেন? কেন সে নিজে নিজেই বংশবৃদ্ধি করতে পারেনা?
Image source – Youtube.com
এই প্রশ্নে আসছি। তবে তার আগে ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি কীভাবে হয় তা আবারো একটু দেখে নেই।
ভাইরাস কীভাবে বংশবৃদ্ধি করে?
ব্যাকটেরিয়া কোষের মধ্যে ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি। Image source – Khan Academy
একটা ভাইরাস যখন একটা ব্যাকটেরিয়া কোষকে আক্রমণ করে তখন তার প্রোটিন আবরণটা বাইরে রেখে শুধু নিউক্লিক এসিড ( ডিএনএ / আরএনএ) ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দেয়। তখন সেই নিউক্লিক এসিড ব্যাকটেরিয়ার কোষের নিউক্লিক এসিডের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এবং ভাইরাসের নিউক্লিক এসিডের রেপ্লিকেশন চলতে থাকে। অনেকগুলো নিউক্লিক এসিড হয়ে গেলে তখন সেই নিউক্লিক এসিডের সিকুয়েন্স অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রোটিন সে সিন্থেসিস করে। প্রোটিন তৈরির সকল উপাদান সে ব্যাকটেরিয়া কোষ থেকেই নেয়। এভাবে প্রত্যেকটি নিউক্লিক এসিডকে আবৃত করে এক একটি প্রোটিন কোট তৈরি হয়। এবং একটা নিউক্লিক এসিড থেকে অনেকগুলো নিউক্লিক এসিড এবং শেষে এক একটা নিউক্লিক এসিড প্রোটিনে আবৃত হয়ে পূর্ণাঙ্গ ভাইরাস তৈরি করে।
এই প্রক্রিয়াটা আমরা কমবেশি পড়ে এসেছি। এই রেপ্লিকেশনটাই দুই পদ্ধতিতে ঘটতে পারে। প্রথমত, ভাইরাস রেপ্লিকেট করবে এবং ব্যাকটেরিয়াল সেল নষ্ট হয়ে যাবে। যাকে বলে লাইটিক সাইকেল। যা আমরা এতদিন পড়ে এসেছি।
দ্বিতীয়ত, এক্ষেত্রেও ভাইরাসের রেপ্লিকেশনের পর ব্যাকটেরিয়াল সেল নষ্ট হয়ে যায় কিন্তু তা তাৎক্ষনিকভাবে নষ্ট হয় না। ভাইরাল নিউক্লিক এসিড ব্যাকটেরিয়াল নিউক্লিক এসিডের মধ্যে ঢুকে যায় এবং ব্যাক্টেরিয়ার রেপ্লিকেশনের সাথে সাথে সেই নিউক্লিক এসিডও রেপ্লিকেট করতে থাকে। এবং এক সময় ব্যাকটেরিয়ার কোষ বিদীর্ণ করে বের হয়ে আসে। একে বলে লাইসোজেনিক সাইকেল।
তাহলে এভাবে সব সময়ই কি ভাইরাস জিতে যায়?
না, ভাইরাস জিততে পারেনা সব সময়, ব্যাতিক্রম হয়। যেমন অনেক ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে নিউক্লিয়াসের বাইরেও গোলাকার ক্রোমোজোম পাওয়া যায় যেগুলোকে আমরা প্লাজমিড বলে থাকি। এগুলো ব্যাকটেরিয়ার ভেতরে থাকলেও এদের বলে ভাইরাল জিনোম। কারণ ভাইরাস নিউক্লিক এসিডটি ব্যাকটেরিয়া কোষের মধ্যে প্রবেশ করানোর পরে প্রতিবারই যে ব্যাকটেরিয়াল জিনোমের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে এমন না। কখনো কখনো ব্যর্থও হয়। তখন সেই জিনোম ব্যাকটেরিয়ার অনুগত হয়ে যায়। ব্যাকটেরিয়ার কাজে লাগতে শুরু করে। বিষয়টা মজার না? অনেকটা প্রাচীনযুগের রাজা বাদশাদের যুদ্ধের মত। এক রাজা আরেক রাজ্য আক্রমণ করে দখল করে নেয়। কখনো পারেনা, তখন তাকেই ওই আক্রান্ত রাজ্যেই বন্দী হয়ে কাটাতে হয়!
এতকিছু তো বুঝলাম তো ভাইরাস কেন নিজে নিজেই বংশবৃদ্ধি করতে পারেনা?
আপনারা হয়তো বলছেন , ” আরে ভাই এইসব তো অনেক আগেই পড়েছি, প্রশ্নগুলোর উত্তর কই?” হ্যাঁ আছে, উত্তর তো অবশ্যই আছে। এই যে প্রক্রিয়ার ভাইরাস বংশ বিস্তার করে এই পদ্ধতির মধ্যেই প্রশ্নগুলোর উত্তর আছে।
আমরা সবাই জানি ভাইরাস অকোষীয়। অর্থাৎ এর কোন পূর্ণাঙ্গ কোষ নামে যে কোষপর্দা, সাইটোপ্লাজম, নিউক্লিয়াস, নিউক্লিয়ার এবং সেলুলার অঙ্গাণু সমন্বিত একটি গঠন এর কথা বলা হয় তা ভাইরাসের নেই। ভাইরাসের শুধু প্রোটিন আবরণ এবং নিউক্লিক এসিড আছে। এখন যদি ভাইরাসের প্রোটিন সংশ্লেষ করা লাগে তাহলে সে প্রয়োজনীয় উপাদান কোথায় পাবে?
এই উপাদান এরা নেয় ব্যাকটেরিয়া এবং তার অন্য কোন বাহকের কাছ থেকে। এজন্যই অন্য কোন সজীব কোষের সংস্পর্শ ছাড়া ভাইরাস নির্জীব পদার্থের মত আচরণ করে। এবং সে তার বংশবৃদ্ধিও অন্য কোন কোষকে আক্রমণ না করে করতে পারেনা।
তথ্যসূত্র –
Best safe and secure cloud storage with password protection
Get Envato Elements, Prime Video, Hotstar and Netflix For Free
Best Money Earning Website 100$ Day
#1 Top ranking article submission website
https://www.khanacademy.org/science/biology/biology-of-viruses/virus-biology/a/bacteriophages